শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৮ অপরাহ্ন
মাহবুবুর রহমান- গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
রাজধানীর উপকণ্ঠে অবস্থিত গাজীপুর আজ রূপান্তরিত হয়েছে শিল্প নগরীতে, বেড়েছে জনসংখ্যা। বর্তমানে দেশের প্রায় সবকয়টি জেলার লোকই গাজীপুরে বসবাস করে।
গাজীপুরের জনসংখ্যা যেভাবে বেড়েছে সেভাবে কিন্তু নাগরিক সুযোগ সুবিধা বাড়েনি। অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে আমাদের প্রিয় এই নগরী।
সিটি কর্পোরেশন শুরুতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গাজীপুর মহানগরবাসী বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত করেছিলেন।
দুঃখজনক হলেও সত্য, জনরায়কে অসম্মান করে বিপুল ভোটে নির্বাচিত একজন মেয়রকে ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারা অন্তরালে রেখে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়। ফলে উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে গাজীপুরবাসী।
একইভাবে সরকারি দলের নেতৃবৃন্দের ক্ষমতা ও স্বার্থের দ্বন্দ্বে দ্বিতীয় পরিষদের মেয়রও তার দায়িত্বকাল অতিবাহিত করতে পারেননি।
আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে হাতি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমার ১৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন সরকার শাহনুর ইসলাম রনি। মঙ্গলবার সকালে টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় তার নিজ বাসভবনে ইশতেহার ঘোষণা করেন।
এ সময় তিনি বলেন-
১. আমি নির্বাচিত হলে গাজীপুর সিটিকে একটি পরি”ছন্ন সবুুজ নগরী হিসেবে গড়ে তুলবো।
২. সিটি কর্পোরেশনের সকল নাগরিকের নাগরিকসেবা সহজ ও জনবান্ধব করবো।
৩. শিল্পবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলবো। অতিরিক্ত করারোপের ফলে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান সিটির বাহিরে অন্যত্র চলে গেছে এবং যাচ্ছে।
বিশেষ করে বিসিক এলাকার শিল্পোদ্যোক্তারা কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই কাঙ্খিত সেবা না পেলেও তাদেরকে দুই থেকে তিন জায়গায় মোটা অংকের মাশুল গুনতে হয়।
এছাড়া বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে গার্মেন্ট কারখানাসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মালিকরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন না, ওয়েস্টেজ ব্যবসার নামে সারা বছরই তাদেরকে জিম্মি করে রাখা হয়। স্বার্থান্বেষী মহলের স্বার্থ হাসিল না হলে বা তারা কোনো কারণে অখুশি হলে শিল্পে কৃত্রিম শ্রমিক অন্তোসহ অনাকাঙ্খিত নানা পরিস্থির সৃষ্টি করা হয়।
মাত্রাতিরিক্ত টেক্স সহ এসব নানাবিধ বিড়ম্বনার কারণে শিল্পোদ্যোক্তারা ব্যবসা গুটিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে । ফলে যে সকল নাগরিক বাড়ী/কলোনী ভাড়ার আয়ে স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করতেন তারা এখন দৈন্যদশায় পড়েছেন। আমি নির্বাচিত হলে শিল্প ট্যাক্স সহনীয় মাত্রায় নির্ধারণ করবো এবং শিল্পের সকল সমস্যা চিহ্নিত করে একটি শিল্প ও শ্রমিকবান্ধক পরিবেশ গড়ে তুলবো। বিশেষ করে টঙ্গী ও কোনাবাড়ি বিসিক এবং টঙ্গীতে রাজউকের নির্ধারিত শিল্প জোনে এখনো যে সকল প্লট পতিত/পরিত্যাক্ত অবস্হায় আছে সেসব স্থানে
শিল্প ইউনিট স্থাপনের জন্য শিল্প্যোদ্যোক্তাদের আগ্রহী করার নানা প্রদক্ষেপ গ্রহন করবো।
যে সকল কারখানা বন্ধ বা রুগ্ন অবস্থায় রয়েছে সেসব কারখানার মালিকদের যথাসাধ্য সহযোগিতা দিয়ে কারখানাগুলো সচল করার চেষ্টা করবো। যাতে নগরবাসীর কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায় এবং শিল্প মালিক ও বাড়ী মালিকগন ভালো থাকেন।
৪. বিকল্প রাস্তা সম্প্রসারণ-উন্নয়ন ঘটিয়ে ঢাকা-গাজীপুর যানজটমুক্ত যাতায়াতের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবো। গাজীপুর শহরের সাথে ঢাকার সহজ যোগাযোগের জন্য বনমালা রোড থেকে রেল লাইনের পূর্বপাশ দিয়ে তুরাগ নদ পর্যন্ত রাস্তাটি সম্প্রসারণ করবো এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করে তা কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত সম্প্রসারণ করবো। ফলে ঢাকা থেকে গাজীপুর যাতায়াতের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
৫. নগরীর পূর্ব-পশ্চিমমুখী দুটি রাস্তা নির্মাণ করা হবে। গাজীপুর শহরকে বলা হয় একরাস্তার শহর। নির্বাচিত হলে জয়দেবপুর জংশনের দক্ষিণপাশ এবং উত্তরপাশ দিয়ে আরও দুটি রাস্তা পূর্ব-পশ্চিমমূখী করে নির্মাণ করার উদ্যোগ নেব। রাস্তা নির্মাণ/প্রশস্তকরণে ভূমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।
৬. রেলক্রসিংগুলোতে ওভারপাস নির্মাণ করবো। মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ব্যস্ততম রাস্তাগুলোর রেলক্রসিংগুলোর উপর প্রয়োজন অনুসারে ওভারপাস নির্মাণ করবো।
৭. আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত স্কুল-কলেজ গড়ে তুলবো। শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। মানসম্পন্ন শিক্ষায় শিক্ষিত না হলে জাতি পিছিয়ে পড়ে। তাই আমি নির্বাচিত হলে ৫৭টা ওয়ার্ডে সিটি কর্পোরেশন এর তত্ত্বাবধানে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ৫৭ টি স্কুল এন্ড কলেজ নির্মাণ করবো।
অপর দিকে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ও স্মার্ট সিটি বিনির্মাণের আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে জনগণের মনোনীত মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন নির্বাচনী ইফতার ঘোষণা করেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ছয়দানা হারিকেন তার নিজ বাসভবনে এ নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তার ছেলে নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়ক সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তার মার্কা টেবিল ঘড়ি মার্কা।
এ সময় জায়েদা খাতুন পক্ষে তার ছেলে ৯ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন।
১. রাস্তাঘাট ড্রেনেজ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ২. হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স ও স্মার্ট সিটি স্থাপন ৩. বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ৪. সড়ক বাতি ও নিরাপত্তা ৫. স্বাস্থ্য সেবা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা ৬. মসজিদ, মাদ্রাসা ও ধর্মীয় খাতের উন্নয়ন ৭. শিক্ষা ও বিনোদন ৮. শ্রমিক কল্যাণ ৯. মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
অপর দিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার মার্কার মেয়র প্রার্থী এডভোকেট আজমত উল্লাহ খান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন হয়েছে ১০ বছর।
যে উদ্দেশ্য নিয়ে সিটি কর্পোরেশন সৃষ্টি হয়েছিল আজও সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। তাই তিনি মনে করেন তিনি যদি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এর নগর পিতা হিসেবে নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি সবার দ্বারে দ্বারে নাগরিক সেবা পৌঁছে দিবেন।
তিনি বিশ্বাস করেন এই পিছিয়ে পড়া সমাজকে আলোকিত করতে হলে আলোকিত মানুষের প্রয়ো